‘আলহামদুলিল্লাহ’ শব্দের অর্থ ‘সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য।’ উত্তম, আনন্দময় ও শুভ খবরে এটি বলা হয়ে থাকে। ইসলামিক বিধানে, পছন্দনীয় কিছু দেখলে বা শুনলে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা হয়।
কিন্তু কারো মৃত্যুতে ‘ইন্নালিল্লাহ’ বলা হয়, যা কোরআন ও হাদিসে মুমিনের বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ধৈর্য ধারণকারীদের সুসংবাদ দিন যারা বিপদগ্রস্ত হলে বলে, إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ (সুরা বাকারা-১৫৫) অর্থ: নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা তাঁর কাছেই ফিরে যাব।
হাদিসেও এ বিষয়ে উল্লেখ আছে। উম্মুল মুমিনিন উম্মে সালামা (রা.) বলেছেন, রসুল (সা.) বলেছেন, যখন কোনো বান্দা বিপদে পড়বে এবং নিম্নের দোয়া বলবে, إِنَّا لله وإنَّا إليه راجعونَ، اللهُمَّ أْجُرْني في مُصِيبتِي، وأَخْلِفْ لي خيرًا منها অর্থ: নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা তার কাছেই ফিরে যাব। হে আল্লাহ, আপনি আমার বিপদের প্রতিদান দিন এবং আমাকে বিনিময়ে এর চেয়ে উত্তম কিছু দিন। (মুসলিম-৯১৮)
কিছু মানুষ অন্যের মৃত্যুতে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলছেন বা লিখছেন এবং এ বিষয়ে বুখারি শরিফের একটি হাদিসও রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করছেন। তবে এ বিষয়ে প্রকৃত হাদিসটি হলো:
أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يَقُولُ مَرُّوا بِجَنَازَةٍ فَأَثْنَوْا عَلَيْهَا خَيْرًا فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَجَبَتْ ثُمَّ مَرُّوا بِأُخْرَى فَأَثْنَوْا عَلَيْهَا شَرًّا فَقَالَ وَجَبَتْ فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ مَا وَجَبَتْ قَالَ هَذَا أَثْنَيْتُمْ عَلَيْهِ خَيْرًا فَوَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ وَهَذَا أَثْنَيْتُمْ عَلَيْهِ شَرًّا فَوَجَبَتْ لَهُ النَّارُ أَنْتُمْ شُهَدَاءُ اللهِ فِي الأَرْضِ (সহিহ বুখারি-১৩৬৭)
হজরত আনাস বিন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, কিছু সাহাবি একটি জানাজার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং প্রশংসা করলেন। তখন নাবী (সা.) বললেন, ‘ওয়াজিব হয়ে গেল’। আবার অপর জানাজার নিন্দা করলেন, তখনও বললেন ‘ওয়াজিব হয়ে গেল’। হজরত উমার (রা.) জিজ্ঞাসা করলে, রসুল (সা.) বলেন, প্রশংসার কারণে জান্নাত এবং নিন্দার কারণে জাহান্নাম ওয়াজিব হয়েছে।
এখানে মূলত বাহ্যিক আমল ও কর্মের ভিত্তিতে মন্তব্য করা হয়েছে। তাই কারো মৃত্যুতে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বললেই তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব হয়ে যাবে না। তার আমল হিসেবে সে জান্নাতি বা জাহান্নামি হবে।
কারো মৃত্যুতে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা কি জায়েজ?
জালেম ও অত্যাচারীর মৃত্যুতে খুশি হওয়া জায়েজ এবং তার মৃত্যুতে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা যাবে। তবে সন্দেহের বশে কোনো মুসলমানের মৃত্যুতে খুশি প্রকাশ করা জায়েজ নয়।
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ بْنِ رِبْعِيٍّ الأَنْصَارِيِّ أَنَّهُ كَانَ يُحَدِّثُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم مُرَّ عَلَيْهِ بِجِنَازَةٍ فَقَالَ مُسْتَرِيحٌ وَمُسْتَرَاحٌ مِنْهُ قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ مَا الْمُسْتَرِيحُ وَالْمُسْتَرَاحُ مِنْهُ قَالَ الْعَبْدُ الْمُؤْمِنُ يَسْتَرِيحُ مِنْ نَصَبِ الدُّنْيَا وَأَذَاهَا إِلَى رَحْمَةِ اللهِ وَالْعَبْدُ الْفَاجِرُ يَسْتَرِيحُ مِنْهُ الْعِبَادُ وَالْبِلاَدُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَابُّ
হজরত আবু কাতাদা বিন রিবয়ি (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) এর নিকট দিয়ে একটি জানাজা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তিনি বললেন, মুমিন বান্দা দুনিয়ার দুঃখ ও কষ্ট থেকে স্বস্তি লাভ করে এবং পাপী বান্দার মন্দ হতে আল্লাহর বান্দা, গাছ পালা ও জীবজন্তু স্বস্তি পায়। (সহিহ বুখারি-৬৫১২)
এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, জালেম বা অত্যাচারীর মৃত্যুতে মুমিন বান্দার শান্তি লাভ হয় এবং খুশির খবরে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা জায়েজ। তবে জালিম না হলে তা জায়েজ নয়।
আপনার জানা মতে, স্বীকৃতি কোনো জালেম ও অত্যাচারীর মৃত্যুতে খুশি হওয়া জায়েজ আছে। সেই হিসেবে তার মৃত্যুতে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ও বলা যাবে।
এসইও ফ্রেন্ডলি ভাষায় এই আর্টিকেলটি লিখেছেন এবং আপডেটেড ইসলামিক তথ্য উপস্থাপন করেছেন। যদি এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন এবং নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।
ট্যাগ:
#ইসলাম #আলহামদুলিল্লাহ #ইন্নালিল্লাহ #হাদিস #জান্নাত #জাহান্নাম #জালেম #বুখারি #মুসলিম #বাংলা_নিউজ